শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০১৪

বিচিত্র বিশ্ব : টেলিস্কোপ (Telescope)

আস-সালামু-আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই?আশা করি আল্লাহ তায়ালার রহমতে ভালোই আছেন।
বিচিত্র বিশ্ব নিয়ে ধারাবাহিক টিউনের আজ লিখবো ৪র্থ পর্ব নিয়ে।আজকের বিষয় টেলিস্কোপ।আপনাদের সাহায্য আর দোয়া পেলে আরো ভালো লিখতে পারবো আশা করি।

টেলিস্কোপ কি?


টেলিস্কোপ হচ্ছে একটা আলোর বক্স।এটা আয়না অথবা লেন্সের মাধ্যমে মহাকাশের বিভিন্ন বস্তুর আলো সংগ্রহ করে।একটা প্রধান আয়না তার থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট আয়নায় উক্ত বস্তুর প্রতিফলন ঘটিয়ে বস্তুর অবস্থান দৃশ্যমান করে তোলে।

টেলিস্কোপের ধরন

রিফ্রেক্টিং টেলিস্কোপ (Refracting Telescope):


আমরা সচরাচর যে টেলিস্কোপ দেখি সেটা এই টেলিস্কোপ।এই টেলিস্কোপ একটা বড় লেন্সের মাধ্যমে আলোর প্রতিসরন ঘটিয়ে দুরের বস্তুকে ছবির আকারে দৃশ্যমান করে।

রিফ্লেক্টিং টেলিস্কোপ ( Reflecting Telescope):


এই টেলিস্কোপ একটা বড় বাকানো আয়না দিয়ে অনেক দুরবর্তি তারা থেকে অস্পষ্ট আলো ছবি হিসেবে তুলে আনে।

রেডিও টেলিস্কোপ (Radio Telescope):


রেডিও টেলিস্কোপ তার শক্তির মাধ্যমে মহাকাশের বিভিন্ন তারা থেকে নির্গত অদৃশ্য তরঙ্গ তুলে ধরে।সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ হচ্ছে ১০০০ ফিট।যা Arecibo, Puerto  Rico তে অবস্থিত এবং ওই দীপের পাহারের চুড়ায় স্থাপন করা হয়েছে।এটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিন করে যখন পৃথিবী তার অংশ পরিবর্তন করে।

স্পেস টেলিস্কোপ (Space Telescope):


এই টেলিস্কোপ পৃথিবীতে বসা ইঞ্জিনিয়ারদের দাঁরা নিয়ন্ত্রিত হয় যা প্রতিদিন ২৪ ঘন্টা পৃথিবীকে প্রদক্ষিন করছে।

অতীতের ইতিহাস থেকেঃ

  • ১৬০৮ সালঃ ফ্লেমিস চশমা নির্মাতা হ্যানস লিপারসে তার আবিস্কৃত প্রথম টেলিস্কোপের জন্য পেটেন্টের আবেদন করেন।
  • ১৬০৯ সালঃ ইতালিয়ান বিজ্ঞানী গ্যালিলিও অনেক গুলো চশমার লেন্সের মাধ্যমে টেলিস্কোপ তৈরি করেন।
  • ১৬৬৮ সালঃ ইংরেজ বিজ্ঞানী আইস্যাক নিউটন একটি প্রতিফলিত টেলিস্কোপ আবিষ্কার করেন যা চশমার লেন্সের পরিবর্তে ২টি আয়না ব্যবহার করে।
  • ১৮৩৮ সালঃ জার্মান জ্যোতির্বিদ ফ্রেড্রিক বেসেল প্রথম টেলিস্কোপের সাহাযে একটি তারার(61 Cygni) দূরত্ব নির্ধারন করেন।যেটা কিনা প্রথম তারার দূরত্ব নির্নয় সুর্যের দূরত্ব নির্নয়ের পর।
  • ১৯১৯ সালঃ ৮ ফিটের হুকার টেলিস্কোপ( যা উইলসন পাহারের চুড়া, ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত ) প্রথম দেখায় যে আমাদের মহা বিশ্ব প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • ১৯৬২ সালঃ এরিয়াল ১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ হয় যেটা প্রথম টেলিস্কোপ পৃথিবীকে প্রদক্ষিন করার জন্য।

হাবল টেলিস্কোপ (The Hubble Space Telescope):


  • হাবল হলো পৃথিবীর প্রথম এবং একমাত্র  টেলিস্কোপ যা মধ্যাকর্ষন শক্তির আয়ত্তে ভাসমান।
  • হাবল টেলিস্কোপ প্রথম মহাকাশে পাঠানো হয় ১৯৯০ সালের ২৪শে এপ্রিল।এটার জন্য খরচ হয়েছিলো ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
  • এটি ৪৩ ফিট দীর্ঘ যা পৃথিবী কে প্রতি ৯৭ মিনিটে একবার প্রদক্ষিন করে এবং এঁর গতি ৮ কিঃমিঃ প্রতি সেকেন্ড।
  • হাবল টেলিস্কোপ অতিবেগুনী থেকে অবলোহিত পর্যন্ত (১১৫-২৫০০ ন্যানোমিটারে) আলোর সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যে দেখতে সক্ষম।
  • এই অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা নিয়ে হাবল যা পর্যবেক্ষণ করে তার প্রেক্ষিতে প্রতি সপ্তাহে ১২০ গিগাবাইট তথ্য পাঠায়। এতো এতো তথ্য সংরক্ষণে তাই ম্যাগনেটো-অপটিক্যাল ডিস্ক ব্যবহৃত হয়।
  • হাবল, তার তোলা প্রথম ছবি পাঠায় ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ২০ মে, সেটা ছিল স্টার ক্লাস্টার NGC 3532’র একটা দৃশ্য।

টেলিস্কোপের মাধ্যমে মহাকাশের বস্তু দেখতে কেমন?

তারা শুধুমাত্র আলো দেয়না।এরা বিভিন্ন ধরনের শক্তিও প্রদর্শন করে।বিভিন্ন ধরনের টেলিস্কোপ বিভিন্ন ধরনের তারার শক্তি প্রদর্শন করে যা মহাকাশের শক্তির সক্রিয়তার অনন্য নিদর্শন।

গামা রশ্মি


আল্ট্রাভায়োলেট


অবলোহিত ছবি (পিন হুইল ছায়াপথ)


তরঙ্গ (হয়ার্লপুল ছায়াপথ)

মি. মাউস মামার ইতিহাস (Mr.Mouse)

আসালামুআলাইকুম আশাকরি সবাই ভালো আছেন।আমি আপনাদের আজ দেখাবো কিভাবে একটি কম্পিউটার মাউস কাজ করে এবং এর ইতিহাস।
মাউস হলো হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ইদুর সদৃশ একটি পয়েন্টিং ডিভাইস।এটি কীবোর্ডের নির্দেশ প্রদান ছাড়াই একটি কম্পিউটারকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

ইতিহাস:
১৯৬৩ সালে ডগলাস এঞ্জেলবার্ট মাউস আবিস্কার করেন। ১৯৮৪ সালে মেকিন্টোস কম্পিউটারে সর্বপ্রথম মাউস ব্যবহৃত হয়।

ডগলাস এঞ্জেলবার্ট এর মাউস
কার্যপদ্ধতি:
মাইস সমতলে নাড়ালে মনিটরের পর্দায় একটি তীর বা হাতের মতো চিহ্ন নড়াচড়া করতে দেখা যায়।এক কার্সর()বলে।মাউস নড়াচড়াকরে ইচ্ছেমতো কার্সরকে মনিটর ডিসপ্লে এর এক স্থান হতে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া যায়।একটি স্ট্যান্ডার্ড মাউসে দুটি বা তিনটি বাটন থাকে। কিন্তু বর্তমানে সুবিধা মতো বাটনওয়ালা মাউস পওয়া যায়।সাধারণভাবে বাম পাশের বাটন ব্যবহার করা হয়।তবে ডান পাশের বাটনে কিছু অতিরিক্ত অপশন রয়েছে যা কিছু কিছু প্রোগামে কাজ করার সময় ব্যবহার করা হয়।ক্রল বাটনযুক্ত মাউসের স্ক্রল বাটন ঘুরিয়ে মনিটরে আমরা যে পেজ ব্যবহার করি তা উপরে বা নিচে করে সহজেই দেখা যায়।

পয়েন্টিং (Pointing): মাউস পয়েন্টারকে মনিটর স্ক্রীনের যেকোন জায়গায় মুভ করানোকে পয়েন্টিং বলে।
ক্লিক (Click): মাউসের বাটন একবার ক্লিক করে ছেড়ে দেওয়াকে সিঙ্গেল ক্লিক বা শুধু ক্লিক বলে।এবং পরপর দুইবার চাপ দেওয়াকে ডাবল ক্লিক বলে।
ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ(Drag and Drop): কোন ছবি,আইকন বা উইন্ডোকে সিলেক্ট করে মাউসের বাম বাটনে চেপে ধরে আনাকে ড্র্যাগ বা ড্র্যাগিং বলে।আর ড্র্যাগ করে কোন ফাইল এক জায়গা থেকে অন্য জাইগাতে ফেলে দেওয়া কে ড্রপ বা ড্রপিং বলে।
সিলেক্ট(Select): কোনফাইল বা ফোল্ডার কে সিলেক্ট করতে বাম বাটন চেপে ধরে সেই ফাইল বা ফাইল গুলোর উপর দিয়ে মাউস পন্টোর কে এমন ভাবে নিয়ে যেতে হবে ডাতে সেই ফাইল বা ফাইলগুলোর উপর অন্য রং এর একটি আচ্ছাদন পড়ে বা হাইলাইট হয়ে যাওয়াকে সিলেক্ট বলে।
আশা করি ইদুর মামার ইতিহাস বুঝতে পারছেন ।দোয়া করেন যেন আগামীতে আরো ভালো ভালো টিউনস্ উপহার দিতে পারি।